Irritation of Unemployment
বেকারত্বের জ্বালা
------------------------
------------------------
আমরা চাই বা না চাই একাডেমিক পড়ালেখা শেষ হওয়ার পর মুহূর্ত থেকেই সমাজ আমাদের তিন অক্ষরের নতুন একটা পরিচয় দেয়। যার নাম বেকার। যারা কোনদিন বেকার থাকেন নাই তাঁরা বুঝবেন না বেকার থাকার কী জ্বালা!
------------------------
------------------------
আমরা চাই বা না চাই একাডেমিক পড়ালেখা শেষ হওয়ার পর মুহূর্ত থেকেই সমাজ আমাদের তিন অক্ষরের নতুন একটা পরিচয় দেয়। যার নাম বেকার। যারা কোনদিন বেকার থাকেন নাই তাঁরা বুঝবেন না বেকার থাকার কী জ্বালা!
বেকারদের সাথে পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের আচরণ দেখে মনে হয় বেকাররা মানুষ নয়, তাঁরা শুধুই বেকার। তেরো-চৌদ্দ বছরের ছেলেদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ছুটি গল্পে বলেছিলেন, তেরো-চৌদ্দ বছরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোন কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। বেকারদের ক্ষেত্রে কথাটা হাড়ে হাড়ে প্রযোজ্য।
পাশের বাসার আন্টিরা বেকারদের অপমান করতে সবচাইতে বেশি পারদর্শী। মা কে এসে বলবে ভাবী, আমার চাচাতো ভাইয়ের মামাতো ভাইয়ের মেয়ের ছেলেটা বিসিএস ক্যাডার হলো, খালাতো ভাইয়ের ফুপাতো বোনের ছেলের মেয়েটা ব্যাংকে যোগদান করলো, আপনার ছেলের কী অবস্থা?
পাশের রুম থেকে কথাগুলো শুনে শুধু বলতে ইচ্ছা করে, আপনার আত্মীয়-স্বজন এতো এতো ব্রিলিয়ান্ট, আর আপনি এতো এতো মুর্খ কেন? কিন্তু কিছুই বলা হয় না। সবাইকে সবকিছু বলে বুঝানো যায় না। কাজের মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে হয়। মুখে বলে প্রতিশোধ নেওয়ার চাইতে কাজের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেওয়া যায় অনেক বেশি।
যাদেরকে খুব কাছের বন্ধু ভাবতেন, সুখ-দুঃখের সাথী ভাবতেন, চাকরি পাওয়ার পর সেই বন্ধুরাও অচেনা হয়ে যায়। কথা শোনাতে, উপদেশ দিতে ছাড়ে না।
বেকার ছেলে-মেয়েরা হলো সবচাইতে মনোযোগী শ্রোতা। এদের যা বলা যায় তাই মনোযোগ দিয়ে শুনে। বেকারদের সামনে পেলেই বক্তৃতা দিতে, চাকরির গাল-গল্প করতে ইচ্ছে করে। কারণ বেকার ছেলের সাথে চাকরির গাল-গল্প করার সুখ, পৃথিবীর সেরা সুখ।
পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলো যেমন- জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী ইত্যাদিতে বাড়ির বাইরে থাকা বেকারদের নিমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা সেটা নিয়েও থাকে বিশাল দ্বিধাদ্বন্দ্ব। কারণ এদের নিমন্ত্রণ জানানো লস আইটেম। অনেক শিক্ষিত লোকই বেকারদের নিমন্ত্রণ জানান স্রেফ লজ্জার কারণে।
অনুষ্ঠানে গেলেও আবার আরেক ঝামেলা। ঠিকমত খাপ খাওয়া যায় না। পরিচিত লোকজন জিজ্ঞাসা করে কী করতেছো? চাকরি-বাকরি কিছু হলো? বাবা-মা কে আর কত কষ্ট দিবা? একটা চাকরি নিয়ে তাঁদের একটু উদ্ধার করো। কথা শুনে শুধু একটা প্রবাদের কথাই মনে হয় মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি। তাছাড়া চাকরি কি ছেলের হাতের মোয়া, চাইলেই পাওয়া যায়?
যাহোক, আশার কথা হলো উপরের পরিস্থিতিগুলো প্রত্যেকটি বেকারের জীবনেই এসেছে। তাঁরা কেউই আজ বেকার নাই। কেউবা শীঘ্রই বেকারের খাতা থেকে নাম তুলে নেবে। তাই এসব নিয়ে মন খারাপ না করে যতটা সম্ভব দ্রুত বেকার থেকে আকার পাওয়ার চেষ্টা করুন।
সৈকত তালুকদার
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত!
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত!
From Bcs our goal Groups
BCS Story,Jobs story, Irritation of Unemployment Story
No comments:
Post a Comment